খুলনার রূপসা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ কয়লার চুল্লী। এসব কয়লা পোড়ানো ধোঁয়ায় বিনষ্ট হচ্ছে চির চেনা প্রকৃতি ও পরিবেশ। এছাড়া কালো ধোয়ায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার মানুষ। কয়লার চুল্লী গড়ে উঠলেও মানা হচ্ছে না নীতিমালা। তবে অবৈধ কয়লার চুল্লীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বসতবাড়ির পাশে কয়লার চুল্লীর বিষাক্ত ক্ষতিকর ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্কদের মধ্যে চর্মরোগের প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধোঁয়ার কারণে ফসল, গাছপালা বিনষ্ট হচ্ছে এবং গাছের ফল-ফলাদিও কমে যাচ্ছে। জলাশয়ের হচ্ছে মাছেরও ক্ষতি। এমনকি ভর্য়কর এ কালো ধোঁয়ায় সর্দি কাশি এবং শ্বাসকষ্ট জনিত রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
রূপসা উপজেলার কয়লার চুল্লীগুলো পরিবেশ ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা এবং ভেঙে দিলেও কর্তৃপক্ষকে তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছে এ ব্যবসা। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের রাজস্ব বৃদ্ধিতে ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা
রামনগর নতুন বাজার খেয়া ঘাটের পূর্ব পাড়ের উত্তর পাশে পুরাতন মোমিন রাইস মিল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোসা. আনজিরা খাতুন বলেন, এই কয়লার চুল্লীর কালো ধোঁয়ার কারনে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও সর্দির খুব সমস্যা হয়।
একই এলাকার জামিলা খাতুন বলেন, ‘যেই ধোঁয়া শুরু হয়, ঠিক সেই মুহূর্তে আমার ছেলেটার কাশি হয়। ডাক্তার দেখাতে এবং ওষুধ কিনতে এক হাজার থেকে এক হাজার পাঁচশ টাকা লাগে।’
একইভাবে ঘনবসতি এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম ও সালমা বেগম বলেন, কয়লা চুল্লীর কালো ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়, গলা জ্বলে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ফুটবল: ৬ লাখ পিস টি-শার্ট তৈরি করেছে সনেট টেক্সটাইল
কয়লা চুল্লীর অবৈধ ব্যবসার কথা স্বীকার করে জামাল খাঁ বলেন, আমি বাপ-দাদার আমল থেকেই এ ব্যবসা করছি। তবে, এটি অবৈধ জেনেও পেটের দায়ে করি। এছাড়া এ কয়লা দেশেই ব্যবহার হয়ে থাকে।
খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. মারুফ বিল্লাহ বলেন, গতবছর আমরা অভিযান চালিয়ে কয়লার চুল্লী ভেঙে দিয়েছিলাম। এখন পুনরায় চালু হলে আবারও অভিযান চালানো হবে।
রূপসা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অবৈধ কয়লার চুল্লীর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ ‘শাপলা পাতা’ মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি, বিলুপ্তির আশঙ্কা